ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি : নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় পুন্যারঝাড় গ্রামের ডালিয়া-তালতলা সড়কের নালার ওপর ৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতুর নির্মাণ কাজ ১৮ মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৩বছরেও (৩৬ মাসে) তা শেষ হয়নি। নির্মাণাধীন সেতুর পাশে চলাচলের জন্য তৈরি করা নিচু সড়কটি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, ডালিয়া-তালতলা সড়কের এ নালার উপর দিয়ে আশপাশের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ চলাচল করেন। সেতুটির কাজ দুই মেয়াদেও শেষ না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। যথাযথ তদারকি এবং জবাবদিহি না থাকায় নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ধীরগতিতে নির্মাণ কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুর ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৩৬ মাসে। এতে চলাচলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ১০টি গ্রামের সাধারণ মানুষ। সেতুর পিলার সাটারিং ঢালাই করে কাজ ফেলে রাখা হয়েছে। কোনো শ্রমিক বা তদারকির দায়িত্বেও নেই কেউ।
উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। পিরোজপুরের মেসার্স কায়েদ বিল্ডার্স ২০২২ সালের ৮ মার্চ কার্যাদেশ পায়। ওই মাসেই স্থানীয় সাব ঠিকাদার আফতাব উদ্দিন কাজ শুরু করেন। ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর কাজের মেয়াদ শেষ হলে তা চলতি বছরের ৮ জুন পর্যন্ত করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, তিস্তা নদী তীরবর্তী দুটি ইউনিয়নের অধিকাংশ কৃষক এই পথে মালপত্র নিয়ে উপজেলার সদরে যান। কিন্তু সেতুর কারণে পণ্য আনা-নেওয়ায় দেখা দিয়েছে জটিলতা। এছাড়াও চর এলাকার মুমূর্ষু রোগী নিয়ে দীর্ঘপথ ঘুরে যেতে হয় সদরে। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদেরও।
সাব ঠিকাদার আফতাব উদ্দিন বলেন, প্রথম দফা কাজের পর মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিলের টাকা আটকে রাখায় কাজ এগিয়ে নিতে পারেননি তিনি। এখন মূল ঠিকাদার কাজ করছেন। মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কায়েদ বিল্ডার্সের ম্যানেজার অভিজিৎ মজুমদার বলেন, তাদের লাইসেন্স ব্যবহার করে দরপত্রের মাধ্যমে কাজ পেয়েছেন ঠিকাদার আফতাব উদ্দিন।
কিন্তু তিনি কাজ ফেলে রাখায় অফিস মূল ঠিকাদারকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেয়। পরে তারা নিজেরাই কাজ করছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হবে বলেও জানান তিনি। ডিমলা উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম বলেন, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে সেতু নির্মাণে দেরি হচ্ছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কাজের সময় বাড়িয়ে নিয়েছিল। সে মেয়াদও শেষ হয়েছে গত জুনে। তারা আবারও কাজের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেছেন। ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।