শীতে খেজুর রস আহরণে আগাম প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত ঠাকুরগাঁওয়ের গাছিরা
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : খেজুর পাতার গা-ঘেঁষে পূর্ব আকাশে ভোরের সূর্যের উঁকিঝুঁকি। হেমন্তের সকালে কুয়াশার চাদর সরিয়ে ছড়িয়ে পড়া লাল আভায় শিশির ভেজা সকালটাও সেজেছে আপন রঙে। ভোরের কুয়াশার শিশির মিশিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে খেজুর গাছের পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। রস আহরণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে খেজুর গাছগুলো। গাছিদের মধ্যে কেউ কেউ বংশপরম্পরায়, আবার কেউ নতুনভাবে রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করছেন।
ঠাকুরগাঁও সদরের নারগুন গ্রাম। এখানে রয়েছে অন্তত ৮শ’ খেজুর গাছ। শীতের শুরুতে রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। দুই সপ্তাহ পর এসব গাছে বাধা হবে রসের হাঁড়ি এই থেকে প্রতিদিন রস পাওয়া যাবে প্রায় ১ হাজার লিটার। এ রস বিশেষ কায়দায় জাল দিয়ে তৈরি হবে সুস্বাদু গুড় ও পাটালি।
এ বিষয়ে বাগান লিজ নেয়া মনিরুজ্জামান মনির জানান, কাক ডাকা ভোর থেকে গাছ প্রস্তুত করার কাজ চলে। আর কয়েকদিন পরে গাছে মাটির হাড়ি বাঁধা হবে। বাদুর যাতে রস নষ্ট করতে না পারে সেজন্য গাছে নেট দেয়া হয়। প্রাকৃতিকভাবে নির্ভেজাল গুড় তৈরি করায় এখানকার গুড়ও রসের চাহিদা অনেক বেশি।
ঠাকুরগাঁওয়ের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক মনতোষ কুমার দে বলেন, ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি খেজুরের রস ও গুড়ের ব্যবসাকে লাভজনক করতে সরকারকে নানামুখী পদক্ষেপ নিতে হবে।
আরও পড়ুনএছাড়াও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খেজুর গাছের বাগান করা গেলে, এটি হয়ে উঠবে লাভজনক ও সম্ভাবনাময় খাত। এজন্য সুপরিকল্পিত উদ্যোগ নেওয়া হলে খেজুরের রস ও গুড়কে একটি লাভজনক শিল্পে রূপান্তর করা যাবে বলে মনে করেন এ শিক্ষাবিদ।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, খেজুর গুড়ের এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে গ্রামীণ সড়কগুলোর দু'পাশে খেজুর গাছ লাগাতে স্থানীয়দের উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ। এছাড়াও নিরাপদ রস, গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন