জবিতে থিসিসে বহাল স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত
জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ১৫ তম আবর্তন ২০২৩-২০২৪ সেশনের থিসিস বন্টনে বিশ্ববিদ্যালয়ের জারিকৃত ২০% শিক্ষার্থীকে গবেষণার সুযোগ দিতে নাম প্রকাশ করা হয়। যা নিয়ে মানসিক চাপের শিকার অনেক শিক্ষার্থী।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে জবির ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান সাক্ষরিত এক নোটিশে এ সিদ্ধান্ত এলে শিক্ষার্থীরা তাদের মাস্টার্সে গবেষণা নিয়ে চিন্তিত হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তে সন্দিহান হয়।
উল্লেখ্য ১৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশ জারি করা হয় । অফিস আদেশে বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর থিসিস গ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সুপারভাইজার বা কো-সুপারভাইজার হওয়ার যোগ্যতা হিসেবে তাদের অবশ্যই পিএইচডি, এমফিল বা থিসিসসহ মাস্টার্স ডিগ্রি থাকতে হবে। এছাড়া একজন কোয়ালিফাইড শিক্ষক স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে এক শিক্ষাবর্ষের তিনজনের বেশি শিক্ষার্থীর সুপারভাইজার হতে পারবেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষে ভর্তির সময় যেসব বিভাগ বা ইনস্টিটিউটে আসন সংখ্যা ৮০ বা তার চেয়ে কম সেসব বিভাগে ওই আসন সংখ্যার ২০ শতাংশ এবং যেসব বিভাগে আসন সংখ্যা ৮০-এর অধিক সেসব বিভাগে ওই আসন সংখ্যার ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে থিসিস নিয়ে অধ্যয়ন করতে পারবে। যেসব শিক্ষার্থীর স্নাতক (সম্মান) বা বিবিএ পর্যায়ে ন্যূনতম সিজিপিএ তিন (৩.০০ বা ৪.০০) আছে তারা থিসিস গ্রহণ করতে পারবেন।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, পাশাপাশি থিসিস গ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সুপারভাইজার লটারির মাধ্যমে অথবা বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের অ্যাকাডেমিক কমিটি কর্তৃক গৃহীত পদ্ধতিতে নির্ধারিত হবে। (তবে কোনোভাবেই শিক্ষার্থীর পছন্দ অনুযায়ী সুপারভাইজার নির্ধারণ করা যাবে না।) যদি কোনো কোয়ালিফাইড শিক্ষক সুপারভাইজার হতে না চান এবং সেক্ষেত্রে যদি বিকল্প কোনো কোয়ালিফাইড শিক্ষক না থাকে তাহলে ওই কোয়ালিফাইড শিক্ষককে সুপারভাইজার হতে হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেছিলেন , এই থিসিসের বিষয়ে আমাদের একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা একটা রিপোর্ট দিবে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী শিগগিরই নতুন সিদ্ধান্ত আসবে। আশা করি ভালো একটা সিদ্ধান্তই আসবে।
কিন্তু এ সংক্রান্ত অফিস স্মারক জারির পর থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শুরু হয়েছে সমালোচনা ও জন্ম নেয় ক্ষোভ। গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। পত্র-পত্রিকা, পোর্টালে এবং টিভি মিডিয়ায় বহু নিউজ প্রকাশিত হওয়ায় তা প্রশাসনের নজরে আসে।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে জানানো হয়, স্নাতকোত্তর পর্যায়ে থিসিস গ্রহণকে আরও সহজ এবং শিক্ষার্থীবান্ধব করার জন্য পূর্বের নীতিমালায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেমন—
আরও পড়ুন১. পূর্বে একজন সুপারভাইজার সর্বোচ্চ ২ জন শিক্ষার্থী সুপারভাইজ করতে পারতেন; এটি বাড়িয়ে এখন ৩ জন করা হয়েছে।
২. থিসিস গ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের সিজিপিএ যোগ্যতার মানদণ্ড ৩.০ নির্ধারণ করা হয়েছে।
৩. কোনো শিক্ষক যদি তার শিক্ষাজীবনে মাস্টার্স পর্যায়ে থিসিস সম্পন্ন করে থাকেন, তবে তিনিও থিসিসের সুপারভাইজার হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
৪. শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ শতাংশের শর্ত তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তগৃহীত হয়েছে, যা খুব শিগগিরই কার্যকর হবে।
কিন্তু এ বিষয়ে সঠিক কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের এমন নোটিশ পরিলক্ষিত হয়েছে বলে জানা যায়। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীরা ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যানসহ রেজিস্ট্রার দপ্তরে গেলে থিসিসে আগ্রহী শিক্ষার্থীদেরকে তাদের নাম লিখিয়ে নিতে বলা হয় এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত দ্রুত আসবে সে আশা দেখানো হয়।
মন্তব্য করুন