ভিডিও শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

জয়পুরহাটের কালাইয়ে হ্যাকারদের কবলে শিক্ষার্থীরা বেহাত উপবৃত্তির টাকা

জয়পুরহাটের কালাইয়ে হ্যাকারদের কবলে শিক্ষার্থীরা বেহাত উপবৃত্তির টাকা

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : কালাইয়ে আরও ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হ্যাকারদের প্রতারণার ফাঁদে পড়েছে। অনলাইনে শিক্ষার্থীদের তথ্য এন্ট্রি করতে গিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে। এতে বেকায়দায় পড়েছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। তথ্য এন্ট্রির আগেই অভিভাবকদের মোবাইল ফোন নম্বর হ্যাক করার অভিযোগ প্রতিষ্ঠান প্রধানদের। এর আগেও ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯৬৭ জন শিক্ষার্থীর এক বছরের উপবৃত্তির কয়েক লাখ টাকা হ্যাক করে হাতিয়ে নিয়েছে এই চক্র।

নতুন করে আরও ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের একাউন্ট হ্যাকারদের প্রতারণার ফাঁদে ঝুলে আছে। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা জানান, প্রতি বছর উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ডাটা অনলাইনে পাঠাতে হয়। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির আওতায় নিতে একযোগে উপজেলার ৫৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনলাইনে ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরু হয়।

এরমধ্যে নতুন ২৭টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তথ্য অনলাইনে এন্ট্রি করতে পারছেন না প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। ক্লাস্টার পর্যায়ে অনুমোদন এবং বিদ্যালয় থেকে চাহিদা পাঠানোর আগমুহূর্তে দেখা যায়, অনলাইনে তথ্য এন্ট্রি করতে গিয়ে পুরাতন শিক্ষার্থীর অভিভাবকের নগদ একাউন্ট নম্বর পরিবর্তিত হয়ে আসছে। অর্থাৎ ক্লাস্টার অনুমোদনের পরই ওইসব নগদ একাউন্ট নম্বরগুলো হ্যাকারদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে, ফলে এন্ট্রি করতে গিয়ে নতুন নম্বর ভেসে ওঠছে।

প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০২৪ সালের জুলাই-ডিসেম্বরের অর্থ অন্য ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯৬৭ জন শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির নগদ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কয়েক লাখ টাকা আত্মসাৎ করে প্রতারক চক্রটি। চলতি বছরের মার্চ মাসে বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তদন্ত করে। কিন্তু হ্যাক হওয়া একাউন্ট নম্বর, আত্মসাৎকৃত অর্থ উদ্ধার এবং জড়িতদের শনাক্তসহ আইনের আওতায় আনার ক্ষেত্রে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।

সেই সময় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তৎকালীন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করে মন্ত্রণালয়। ওই বিষয়ে সমাধান হওয়া তো দূরের কথা, এখন নতুন করে আরও ২৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হ্যাকারদের বেড়াজালে পড়েছে।

আরও পড়ুন

উপজেলার মাদাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ বলেন, ‘বিদ্যালয়ে উপবৃত্তির তথ্য অনলাইনে এন্ট্রি দেওয়ার সময় শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের জাতীয় পরিচয়পত্র না দিলে নগদ একাউন্ট তৈরি হয় না। তাহলে সেই পরিচয়পত্রতেই ভিন্ন মোবাইল নম্বর যুক্ত হয়ে কীভাবে একাউন্ট চালু হচ্ছে। আসলে এটা ভেলকিবাজি ছাড়া কিছুই না।’

কালাই মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এটি কেবল হ্যাকারদের প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয় নয় বরং সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যার ব্যবস্থার নিরাপত্তা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠেছে। সম্ভবত সফটওয়্যারের কোনো ক্লোন বা ডুপ্লিকেট সংস্করণ দিয়ে তথ্য পাচার হচ্ছে।

কালাই উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার রাশেদুল আলম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের তথ্য অনলাইনে কেন এন্ট্রি হচ্ছে না তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। একাউন্ট নম্বর যদি হ্যাক করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীর তথ্য অনলাইনে এট্রি করা সম্ভব নয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা আক্তার জাহান বলেন, ‘উপবৃত্তি কার্যক্রমে এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা উদ্বেগজনক। ইতোমধ্যে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হয়েছে।’

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়া প্রেসক্লাব নির্বাচনে রানু সভাপতি ও কালাম সম্পাদক নির্বাচিত

কুড়িগ্রামে রৌমারী সীমান্তে শূন্যরেখার কাছে অজ্ঞাত যুবতীর মরদেহ উদ্ধার

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গাঁজাসহ মাদক কারবারি আটক

নাটোরের সিংড়ায় কৃষিজমিতে পুকুর খনন, ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড

নিউইয়র্কে ‘গাধূলিবেলায়’ নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে কুখ্যাত ডাকাত লালচাঁন হেরাইনসহ আটক