বর্ষার আগমনে সিরাজগঞ্জে জেলে পরিবারগুলোতে ফিরে এসেছে স্বস্তি

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : বর্ষার আগমনে সিরাজগঞ্জে জেলে পরিবারগুলোতে ফিরে এসেছে স্বস্তি কষ্টের দিন শেষ। দীর্ঘদিন পর নদীতে বন্যার পানিতে মাছ ধরতে পেরে তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। নদীগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় অনেক জেলে বেকার হয়ে পরেছিল। জীবন কেটেছে তাদের অনেক কষ্টে। যমুনায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের এই কষ্টের দিন শেষ হয়েছে বলে নদী পাড়ের জেলেরা জানান।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় স্থায়ী মৎস্যজীবীর সংখ্যা ২৬,৯৭৩ জন এবং মৌসুমী জেলের সংখ্যা প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার। এই সব জেলে পরিবারগুলোর আয়ের প্রধান উৎস্যই হলো মাছ ধরা ও বিক্রি করা। কিন্তু নদী ও চলনবিলে পানি না থাকায় অধিকাংশ জেলেই বেকার হয়ে পড়েছিল বেশ কয়েক মাস ধরে। অবশেষে বন্যা আসায় তাদের বেকারত্ব দূর হয়েছে।
এই সব জেলেরা নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে মাছ ধরে বিক্রি করছেন। গত রোববার দুপুরে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাঐতার স্লুইজ গেট এলাকায় গিয়ে দেখা যায় জেলেরা নানা ধরনের জাল দিয়ে মাছ ধরছেন। এই সব মাছ স্থানীয় বাঐতারা বাজারে ডাকের মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ শহরসহ বিভিন্ন এলাকার ক্রেতারা এই মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
সিরাজগঞ্জ শহর থেকে মাছ কিনতে আসা সাইফুল ইসলাম জানান, এই এলাকা নদীতীরবর্তী হওয়ায় এখানে যমুনার টাটকা বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া যায়। এই মাছের স্বাদও অতুলনীয় তাই এখানে আসি যমুনার মাছ কিনতে।
আরও পড়ুনমাছ বিক্রেতা আয়নাল হক জানান, এত দিন অনেক কষ্টে আমাদের সংসার চালাতে হয়েছে। এখন নদীতে বানের (বন্যার) পানি আসায় মাছ ধরে বিক্রি করে টাকা আয় করছি। প্রতিদিন রাতে নদীতে ধিয়াল (মাছ ধরার যন্ত্র) পেতে মই জাল দিয়ে মাছ ধরে সকালে বাজারে বিক্রি করি। এতে ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকার মাছ বিক্রি হয়।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহিনূর রহমান জানান, প্রতি বছরের মত এবছরও জেলায় বন্যা শুরু হয়েছে। সেই সাথে মৌসুমী মৎস্যজীবীরা মাছ ধরে বিক্রি শুরু করছে। এতে তাদের পরিবারগুলোতে স্বচ্ছলতা ফিরছে। তিনি আরও জানান, জেলায় ২৫টি মৎস্য অভয়াশ্রম রয়েছে যেগুলোতে সারাবছর মা মাছ সংরক্ষণ করা হয়। এই মা মাছগুলো বর্ষায় ডিম ছাড়ে এবং প্লাবন ভূমিতে ছড়িয়ে জেলায় মাছের চাহিদা পূরণে বড় ভূমিকা পালন করছে।
মন্তব্য করুন