রংপুরের গঙ্গাচড়ায় খরায় থমকে গেছে আমন চারা রোপণ

গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি : কয়েকদিন থেকে টানা বৃষ্টিহীন আবহাওয়ায় রংপুরের গঙ্গাচড়ায় আমন ধানের চাষ প্রায় সম্পূর্ণভাবে থমকে গেছে। শুকিয়ে যাচ্ছে জমি, নষ্ট হচ্ছে বীজতলার চারা। সময়মতো চারা রোপণ না হলে আমন মৌসুমে ফলনহানি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এবছর আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ৩৫০ হেক্টর। এখন পর্যন্ত ১ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণ হয়েছে। সরেজমিন উপজেলার কোলকোন্দ, বড়বিল, গজঘন্টা, নোহালী, ও বেতগাড়ী ইউনিয়নের মাঠজুড়ে এখনও পানির চিহ্ন নেই।
এসব অঞ্চলের কৃষকদের প্রধান বর্ষাকালীন ফসল হচ্ছে আমন ধান। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে জমি চাষযোগ্য হয়ে ওঠেনি। অনেকেই চারা তৈরি করলেও তা শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। কোলকোন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ কোলকোন্দ গ্রামের কৃষক হাফিজুল ইসলাম (৫২) বলেন, জুলাইয়ের শুরুতেই চারা রোপণ করি প্রতিবছর, এবার জমিতেই ফাটল ধরেছে। বীজতলায় পানি না দিতে পারলে সব নষ্ট হয়ে যাবে।
গঙ্গাচড়া ইউনিয়নের চেংমারী গ্রামের কৃষক লাইবুল ইসলাম (৪০) জানান, চারা তো তৈরি করেছি, কিন্তু জমিতে রোপণের উপযোগী পরিস্থিতি নেই। পাম্প দিয়ে পানি দিতে গেলে খরচ বাড়ে, আবার ফলন হবে কি না তাও নিশ্চিত না।
আরও পড়ুনএদিকে চাষাবাদ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন দিনমজুররাও। বেতগাড়ী ইউনিয়নের কিসামত গ্রামের কৃষিশ্রমিক রহমত আলী (৪৮) বলেন, এসময়ে আমাদের হাতে কাজ থাকার কথা, কিন্তু এখন কেউ জমি চাষই করছে না। প্রতিদিন বসে থাকি, কেউ ডাকে না। ঘরে চাল নেই, হাতে টাকা নেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম জানান, গঙ্গাচড়ায় এবছর প্রায় ১৯ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি না হলে চাষে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটতে পারে। তবে আমরা বিকল্প হিসেবে সেচ সুবিধা ও কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
তবে কৃষকদের অনেকেই জানান, সেচ সুবিধা সবার কাছে পৌঁছায় না। তাই তারা এখন বৃষ্টির প্রতীক্ষায় রয়েছেন। যদি জুলাইয়ের মধ্যেই রোপণ না করা যায়, তাহলে ফলন আশানুরূপ হবে না।
মন্তব্য করুন