বাংলা ভাষা নিয়ে বিতর্ক, তোপের মুখে প্রসেনজিতের দুঃখ প্রকাশ

ভারতীয় বাংলা সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা প্রসেনজিৎ। কয়েক দিন আগে মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত হয় ‘মালিক’ সিনেমার সংবাদ সম্মেলন।
মঞ্চে সিনেমাটির পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতার পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম বাংলার সুপারস্টার প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি।
এ অনুষ্ঠানে একজন সাংবাদিক প্রসেনজিৎকে বাংলায় প্রশ্ন করেন। প্রসেনজিৎ পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, “এখানে বাংলায় কেন প্রশ্ন করছেন?” তারপর থেকে প্রসেনজিতের বক্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর চর্চা চলছে, ট্রলের শিকার হয়েছেন এই অভিনেতা।
প্রশ্ন উঠেছে— বাংলায় কাজ করে বাংলা ভাষাকেই অপমান করলেন প্রসেনজিৎ?
এ ঘটনার ৯ দিন পর নিজের অবস্থান পরিষ্কার করলেন প্রসেনজিৎ। ফেসবুকে পোস্ট করা একটি বিবৃতিতে পুরো ঘটনা ব্যাখ্যা করেছেন। পাশাপাশি দুঃখ প্রকাশ করেছেন এই অভিনেতা।
প্রসেনজিৎ বলেন, “কিছু দিন হলো আমার একটা কথা, বলা ভালো একটা বাক্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেটা নিয়েই কিছু বলতে চাই।
আমি ৪২ বছর মূলত বাংলায় কাজ করছি। গত কয়েক বছর জাতীয় স্তরে কাজ করার সুযোগ এসেছে। সেরকমই একটা হিন্দি সিনেমার ট্রেইলার মুক্তি উপলক্ষে ১ জুলাই মুম্বাইয়ে সাংবাদিক সম্মেলন হয়েছিল।
ডায়াসে ছিলেন— সিনেমার পরিচালক, শিল্পী, অন্যান্যরা সবাই প্রথম থেকেই মূলত ইংরেজিতেই কথা বলছিলেন। সেখানে বাংলার একজন সাংবাদিক আমাকে বাংলায় প্রশ্ন করেন।
আরও পড়ুনতিনি আমার দীর্ঘ দিনের পরিচিত, অত্যন্ত স্নেহের পাত্রী। সেই মুহূর্তে আমার মনে হয়েছিল বাংলায় উত্তর দিলে হয়তো অনেকে সঠিক মানে বুঝতে পারবেন না। যেহেতু ওখানে বাংলা ভাষা বোঝেন না, এমন মানুষের সংখ্যাই বেশি। তাই খানিকটা বাধ্য হয়েই আমি বলি, বাংলা ভাষায় কেন প্রশ্ন করছেন?”
সামাজিক মাধ্যমে শুধু একটা সেন্স তুলে ধরেই বিচার করা হচ্ছে প্রসেনজিৎকে।
তাই হয়তো অনেকে ওই কথায় আঘাত পেয়েছেন। তবে এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে ভাবতেও পারেননি তিনি। এ বিষয়ে প্রসেনজিৎ বলেন, “কষ্ট আমিও পেয়েছি।
এখনো পাচ্ছি। কারণ এই কথার এরকম প্রতিক্রিয়া হতে পারে ভাবতেই পারিনি। হয়তো কয়েকটা ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করে আমার বলা কথার উদ্দেশ্যটা আমি বোঝাতে পারিনি। আর আমার ধারণা সেখান থেকেই ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।”
মাতৃভাষা বাংলাকে অসম্মান করা প্রসঙ্গে প্রসেনজিৎ বলেন, “এমনটা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। বাংলা আমার প্রাণের ভাষা। ভালোবাসার ভাষা।
তবে চিরকাল আমার কাছে বাংলার মানুষের বিচার শিরোধার্য। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এই ধারণা অটুট থাকবে। তবে শেষে যেটা না বললেই নয়, আমি এইটুকু বুঝেছি, আমার বলা কথায় আপনাদের যথেষ্ট আঘাত লেগেছে। তাই আমি দুঃখিত।”
মন্তব্য করুন