বগুড়ার শাজাহানপুরে ‘বসন বুড়ি মেলা’ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : চলতি বছরে শ্রাবণ মাসের প্রথম রোববার আগামী ২০ জুলাই বগুড়ার শাজাহানপুরের ঐতিহ্যবাহী ‘বসন বুড়ি মেলা’ আয়োজনের পক্ষে ও বিপক্ষে বগুড়া জেলা প্রশাসক বরাবর স্থানীয় দু’টি পক্ষ পৃৃথক পৃথক আবেদন করেছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর মেলা সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর মাঝে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
মেলা আয়োজনের বিপক্ষে আবেদন করেছেন বড়পাথার বালিয়াদিঘী যৌথ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ কমিটির সভাপতি ও চোপীনগর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মোজাফ্ফর রহমান। তিনি তার আবেদনে উল্লেখ করেন, বড়পাথারসহ আশপাশের পাঁচ গ্রামের মুসুল্লিগণ প্রায় ১১০ বছর আগে বালিয়াদিঘীতে যৌথ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ্ প্রতিষ্ঠা করে এখন পর্যন্ত নামাজ আদায় করে আসছেন। প্রতি ঈদে ৩০-৩৫ হাজার মুসল্লি এক সাথে নামাজ আদায় করেন। তা সত্ত্বেও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে একটি মহল বহু বছর যাবত বালিয়াদিঘীতে ‘বসন বুড়ি মেলা’র আয়োজন করে আসছিল। কালের পরিক্রমায় মেলা অনুষ্ঠানের কুসংস্কার বন্ধ করার লক্ষ্যে ২০০৩ সালে স্থানীয় মুসল্লিদের উদ্যোগে বালিয়াদিঘীতে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘মাদরাসাতুল হাদিছ ও ইয়াতিমখানা’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। তারপরও স্থানীয় মুসল্লিদের মতামতকে উপেক্ষা করে কিছু ব্যক্তি চলতি বছর মেলা আয়োজন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। মেলা আয়োজন করা হলে তা স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভ ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করবে। এমতাবস্থায় মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতি সমুন্নত রাখতে বসন বুড়ি মেলা চিরতরে বন্ধ করা প্রয়োজন।
অপরদিকে মেলা আয়োজনের পক্ষে আবেদন করেছেন বড়পাথার গ্রামবাসীর পক্ষে কামাল হোসেন, আবুল, হাবিব, শাহা আলমসহ ১২ জন। তারা আবেদনে উল্লেখ করেন, মহিষের মাংসের জন্য বিখ্যাত প্রায় ২শ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী বালিয়াদিঘী ‘বসন বুড়ি মেলা’। প্রতি বাংলা সনের শ্রাবণ মাসের প্রথম রোববার অনুষ্ঠিত হয় এই মেলা। মেলাকে ঘিরে বড়পাথারসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ মেতে উঠে উৎসব-আনন্দে। নাইওরিতে ভরে উঠে প্রতিটি বাড়ি। সবাই বছরজুড়ে মেলার প্রতীক্ষায় থাকেন। তাই গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐতিহ্য রক্ষায় আগামী ২০ জুলাই শ্রাবণ মাসের ৫ তারিখ রোবাবর ‘বসন বুড়ি মেলা’ অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে মেলাটি সরকারিভাবে ইজারা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করা হয়েছে।
আরও পড়ুনমেলার পক্ষে-বিপক্ষে আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা জানান, স্থানীয়রা পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় মেলার আয়োজন করা সম্ভব নাও হতে পারে। তারপরও তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন