বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে প্রণোদনা দিয়েও কমেছে পাটের আবাদ

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : দাম কম পাওয়ায় সারিয়াকান্দিতে গত বছর কৃষকরা পাটচাষে লাভ করতে পারেননি। এ বছর প্রণোদনা দিয়েও কমেছে পাটের আবাদ। তবে এ বছর বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক। লাভবান হওয়ায় আগামীতে পাটচাষ বাড়বে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের।
সারাদেশের মধ্যে পাটচাষের জন্য খ্যাত বগুড়া জেলা। এর মধ্যে আবার সবচেয়ে বেশি পাট উৎপন্ন হয় সারিয়াকান্দিতে। সারিয়াকান্দির বেলে দোঁআশ মাটি পাটচাষের জন্য খুবই উপযোগী। কিন্তু এ উপজেলায় দিনদিন পাটচাষ কমছে। গত বছরের তুলনায় এ বছরও ৫০০ হেক্টর জমিতে পাটচাষ কম হয়েছে। এর কারণ হিসেবে কৃষকরা জানিয়েছেন, গত কয়েকবছর ধরেই তারা বাজারে পাটের ভালো দাম পাননি। ভালো দাম না পাওয়ার অব্যাহত লোকসানের আশঙ্কায় তারা পাটচাষ বিরত থাকছেন। তাছাড়া গত বছর আগাম বন্যা হওয়ার কারণেও তারা অপরিপক্ক পাটগাছ কর্তন করে এবং আঁশ কম পেয়েছেন। তাছাড়া পাটগাছ পঁচাতে সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না থাকাও পাটচাষ কম হওয়ার একটি অন্যতম কারণ।
বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বছর প্রতিমণ পাট বাজারে ৩২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তাই এ বছর কৃষকরা পাটচাষে বেশ লাভবান হচ্ছেন। পাট বিক্রি করে তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। কিন্তু গত বছরের চিত্র ছিল একেবারেই ভিন্ন। গত বছর কৃষকরা মৌসুমের সময় বাজারে মাত্র ১৮০০ টাকা থেকে শুরু করে ২৪০০ টাকা মণ পাট বাজারে বিক্রি করেছেন। তাই গত বছর তাদের লোকসান গুনতে হয়েছে। এজন্য কিছুকিছু কৃষক পাটচাষ না করে জমি পতিত রেখেছেন।
সদর ইউনিয়নের পারতিত পরল গ্রামের কৃষক লেবু মিয়া বলেন, গত বছর ৫ বিঘা জমিতে পাটচাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছে। বাজারে যে দাম পাওয়া গিয়েছিল, তা দিয়ে ফসলের খরচই উঠেনি। এ বছরও পাটচাষ করেছিলাম। সবগুলো পাট ধৌত করে বাজারে বিক্রি করেছি এবং বেশ ভালো দাম পেয়েছি। এতে এ বছর পাটচাষে লাভবান হয়েছি।
আরও পড়ুনসারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এ উপজেলায় ৩৬৫০ হেক্টর জমিতে পাটচাষ হয়েছিল। এ বছরও পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৬৫০ হেক্টর। কিন্তু মাত্র ৩১০৫ হেক্টর জমিতে পাটচাষ হয়েছে। এ পর্যন্ত ২৯১৭ হেক্টর জমির পাট কাটা হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর প্রতি হেক্টর জমিতে ফলন হয়েছিল ২.৫ মেট্রিক টন। এ বছর প্রতি হেক্টর জমিতে ফলন হয়েছে ২.৮ মেট্রিক টন। এ বছর সাধারণত এ উপজেলায় দেশী, তোষা, মেস্তা এবং কেনাফ জাতের পাটচাষ হয়েছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, গত বছর দাম কম হওয়ার কারণে এ বছর পাট কিছুটা কম হয়েছে। তবে এ বছর কৃষকরা পাটের দাম ভালো পেয়ে তারা লাভবান হচ্ছেন। তাই আশা করা যাচ্ছে আগামীতে এ উপজেলায় পাটচাষ বাড়বে।
মন্তব্য করুন