বোমার হুমকি, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শিক্ষকদের আমরণ অনশন
_original_1757777688.jpg)
ময়মনসিংহের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে বর্তমানে এক নাটকীয় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয় শিশু, কিশোর এবং কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের মাঠে খেলতে চাওয়া নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব এখন চরম আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের খেলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং এ নিয়ে সামান্য বাকবিতণ্ডাকে কেন্দ্র করে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে ‘বোমা মেরে কলেজ উড়িয়ে দেওয়ার’ মতো গুরুতর হুমকির অভিযোগ আনা হচ্ছে। এই অভিযোগের প্রতিবাদে কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা আমরণ অনশনে বসেছেন।
এ সব বিষয়কে শিক্ষকদের সাজানো নাটক উল্লেখ করে হৃদয় মন্ডল নামে সাবেক এক শিক্ষার্থী বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা কলেজ মাঠে আর খেলতে পারছি না। স্যাররা গেট বন্ধ করে দিয়েছেন। আমাদের একমাত্র দাবি, কলেজ ছুটির পর যেন আমরা মাঠে খেলাধুলা করতে পারি।
হৃদয় মন্ডল জানান, তারা কোনো ধরনের হুমকি দেননি। তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, যদি তারা ‘বোমা মেরে কলেজ উড়িয়ে দেওয়ার’ মতো কোনো হুমকি দিয়ে থাকেন, তবে প্রমাণসাপেক্ষে যেকোনো ব্যবস্থা মাথা পেতে নেবেন। একাধিক স্থানীয় কিশোরও একই দাবি করেছে। তাদের ভাষ্যমতে, তারা শুধুমাত্র খেলার অধিকার ফিরে পেতে চায়, কিন্তু কলেজ প্রশাসন তাদের খেলতে দিতে রাজি হচ্ছে না।
স্থানীয় যুবক রায়হান উদ্দিন এই অনশন এবং হুমকির অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, মাঠে খেলতে না দেওয়ার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ যে কারণগুলো দেখাচ্ছে, সেগুলো বানোয়াট। তারা বলছেন বহিরাগতরা এসে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে, কিন্তু আমাদের জানা মতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। বরং কলেজ প্রশাসন মাঠটিকে নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থে ব্যবহার করতে চায়।
স্থানীয় কিশোর সুমন মিয়া অভিযোগ করেন, মাঠ আমাদের এলাকার সবার। এখানে বছরের পর বছর ধরে খেলাধুলা হয়ে আসছে। কিন্তু এখন কলেজ কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাতে আমাদের ঢুকতে দিচ্ছে না। এটা আসলে দুর্নীতিরই একটা অংশ।
আরও পড়ুনসবুজ, সাব্বির অপু ও তপু বলেন, আমাদের ন্যায্য দাবির বিরুদ্ধে তারা এখন ‘বোমা মারার হুমকি’র মতো মিথ্যা অভিযোগ এনে সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করছে। কলেজ প্রশাসনের উচিত এসব মিথ্যাচার বন্ধ করে ছাত্রদের এবং স্থানীয় কিশোরদের খেলার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া।
অন্যদিকে, এই দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে শনিবার দুপুর ১ টার দিকে কলেজের অধ্যক্ষ ড. আতাউর রহমান এবং শিক্ষকরা শহীদ মিনারে আমরণ অনশনে বসেছেন। সন্ধ্যা ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও তারা আমরণ অনশন অব্যাহত রাখেন।
তাদের অভিযোগ, কলেজের খেলার মাঠে বহিরাগত ও সাবেক শিক্ষার্থীরা জোর করে খেলতে আসে এবং এ সময় তারা কলেজের বিভিন্ন স্থাপনা ও গাছপালা ভাঙচুর করে। এ ছাড়া, কলেজের গেটসংলগ্ন কাকলি ক্লাবে বসে বহিরাগতরা নারী শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
অধ্যক্ষ ড. আতাউর রহমান বলেন, সুন্দর প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংসের পায়তারা করা হচ্ছে। কলেজকে উড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বহিরাগতরা সরাসরি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনবরত হুমকি দিচ্ছে। তাদের দাবি, কলেজের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।
মন্তব্য করুন