কুড়িগ্রামের উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত ৫ লক্ষাধিক মানুষ

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসক এবং কর্মচারীর সংকটে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার ৫ লক্ষাধিক মানুষ। অপারেশন থিয়েটার থাকলেও তা কোন কাজে আসছে না। টেকনিশিয়ান না থাকায় এক্স-রে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনে ধুলোবালির আস্তরণ পরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চেলের হাজারো সুবিধা বঞ্চিত মানুষ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। এভাবেই নানা সংকটে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৬ সালে ৩৩ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠার পর ২০১৮ সালে তা ৫০ শয্যায় উন্নতি করা হলেও চিকিৎসা সেবার মান বাড়ে নি। এ অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে জুনিয়র কন্সালেন্টের ১০ পদের বিপরীতে আছেন মাত্র একজন মেডিকেল অফিসার, সহকারী সার্জন ও ডেন্টাল সার্জনের ১৬ পদের বিপরীতে আছেন মাত্র দুইজন। চিকিৎসকের ২৬ পদের ২৩ টি শুণ্য রয়েছে। দ্বিতীয়, তৃতীয়, ৪র্থ শ্রেণিসহ বিভিন্ন পদের ২৭৭ টি পদ থাকলেও ১০৪ টি পদই শূণ্য রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, ২টি এক্স-রে মেশিনের ১ টি অচল হয়ে আছে দীর্ঘদিন থেকে। ৫ টি ইসিজি মেশিনের ৩ টি অচল, ২ টির মধ্যে সেমি অটো বায়োমেট্রিক এনালজারের ১ টি অচল, সেল কাউন্টার মেশিন নষ্ট হয়ে আছে দীর্ঘদিন থেকে। তাছাড়া সরবারহকৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করার কারণে ধীরে ধীরে ধুলোবালির আস্তরণ পরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরকারের কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি গুলো এ অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবায় কোন কাজে আসছে না।
আরও পড়ুনউপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের আখি বেগম জানান, বিড়াল কামড় দেয়ায় প্রথমদিন ভ্যাকসিন দিলেও আজ বলেছেন, ভ্যাকসিন নাই কুড়িগ্রাম হাসপাতালে যান। বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা মহিরন বেগম (৫৫), জছিজল হক (৬০) সহ অনেকেই বলেন, জ্বর, সর্দি ছাড়া কোন রোগের ওষুধ নাই। এভাবেই চলছে উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা: মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে বহুবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে কিন্তু কোন সমাধান হয়নি।
মন্তব্য করুন