ভিডিও শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

জবি মাইক্রোবায়োলজি ডিপার্টমেন্টের উদ্যোগে ৩ দিনব্যাপী বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত

জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ ৩ দিনব্যাপী বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা কার্যক্রমের আয়োজন করেছে। জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং আগাম রোগ শনাক্তকরণের লক্ষ্যে আয়োজিত এ কার্যক্রমে জবি শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা সেবা প্রদান করা হয়।

১,২ ও ৩ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত এই কার্যক্রমে প্রায় পাচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। কার্যক্রমে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা শিক্ষকবৃন্দের তত্ত্বাবধানে নমুনা সংগ্রহ, প্রাথমিক পরীক্ষা এবং সচেতনতামূলক পরামর্শ প্রদান করেন।

বিভাগের উদীয়মান গবেষক আবু হাসান বলেন, "আমাদের এই ক্যাম্পেইনের মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের মধ্যে ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রাথমিক পর্যায়ে সংক্রমণ শনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা করা। আমরা IgG ও IgM নির্ভর আধুনিক টেস্টের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের রক্ত নমুনা পরীক্ষা করছি, যা পূর্ববর্তী বা বর্তমান সংক্রমণের তথ্য প্রদান করে। এই কার্যক্রম শুধু গবেষণার জন্যই নয়, বরং এটি একটি সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ। ডেঙ্গুর মতো একটি ভয়াবহ ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতা গড়ে তোলা এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষা করা আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।"

অন্য এক তরুন গবেষক মোঃ আরাফাত বলেন, "ডেঙ্গু ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার পর প্রথমে IgM অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এটি বলে দেয়, আপনি সাম্প্রতিকভাবে সংক্রমিত হয়েছেন। IgG তৈরি হয় একটু পরে, এবং এটি বুঝিয়ে দেয় আপনি আগেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, বা ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরে স্মৃতি প্রতিরক্ষা তৈরি হয়েছে। যদি কেউ একবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে IgG পজিটিভ থাকে, এবং পরে আবার অন্য টাইপের ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়, তখন severe dengue (যেমন Dengue Hemorrhagic Fever) হবার ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই জনসচেতনতা সৃষ্টিই হতে পারে সুস্থতার প্রধান উপায়। "

আরও পড়ুন

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন,”বর্তমান সময়ে ডেঙ্গু একটি খুবই কমন রোগ। প্রতিবছর বর্ষায় এটির প্রাদুর্ভাব আরো বেড়ে যায়।এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। বিনামূল্যে তারা ডেঙ্গু পরীক্ষা করছে এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করছে।" সহকারী অধ্যাপক মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, "এখানে অনেকে আছে যারা জানেই না যে তারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে, সেইটা আমি স্ক্রিনিং করছি যে লাইফটাইমে কেউ তারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে কিনা। আমারা জানি একটা ডিজিজ এ যতজন পেশেন্ট হসপিটালে ভর্তি হয় তার চেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়। আমি আসলে এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাচ্ছি যে কত পার্সেন্ট লোক আক্রান্ত হয়েছে কিন্তু তারা জানে না যে আক্রান্ত হয়েছে।"

বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন, “এটি মূলত আমাদের বিভাগের একজন শিক্ষক মোঃ শরিফুল ইসলামের একটি প্রজেক্ট। তার এই প্রজেক্ট অংশ হিসেবে তিনি এই উদ্যোগ টি হাতে নিয়েছে। এখানে আমরা র্যাপিড এন্টিবডি টেস্ট করছি। তবে সাকপেক্টেড কেইস পেলে আমরা রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তারের চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেই।” উল্লেখ্য, বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় এই ধরনের উদ্যোগ জনস্বার্থে সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চট্টগ্রামে আরও ৩ জনের করোনা শনাক্ত

দলের কেউ অপরাধ করলেই ব্যবস্থা নেবে বিএনপি: রিজভী

গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রাম পুরুষশূন্য, ২৪ ঘণ্টায়ও মামলা হয়নি,

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় হামলা চালিয়ে ২ আসামি ছিনতাই, ওসিসহ আহত ২৩

পাবনার সুজানগরে দফায় দফায় পেঁয়াজের বাজারে ধস

ডাকসু নির্বাচনে ভিপি-জিএসের লড়াই জমে উঠছে, আলোচনায় ডজনখানেক ছাত্রনেতা