বরগুনায় পেটে ৭ ইঞ্চি চিমটা রেখেই সেলাই করে দিলেন ডাক্তার

বরগুনায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের সময় রোগীর পেটে ৭ ইঞ্চি লম্বা চিমটা রেখেই সেলাই দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক সার্জনের বিরুদ্ধে। অস্ত্রোপচারের সাত মাস পর গত ১৮ জুন বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুনরায় অস্ত্রোপচারে ফরসেপটি বের করা হয়। এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন কহিনুর বেগম (৭০) নামের ওই ভুক্তভোগী।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সাত মাস আগে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াতলী গ্রাম থেকে বরগুনার পৌর শহরের সোনাখালী এলাকায় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন ষাটোর্ধ্ব কহিনুর বেগম। হঠাৎ পেটব্যথা শুরু হলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বরগুনার ‘কুয়েত প্রবাসী হাসপাতাল’ নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে। সেখানে ধরা পড়ে জরায়ুর সমস্যা। এরপর ২০২৪ সালের ১৮ নভেম্বর ওই হাসপাতালেই তার জরায়ুর অস্ত্রোপচার করেন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. ফারহানা মাহফুজ এবং কুয়েত প্রবাসী হাসপাতালের নিয়মিত চিকিৎসক ডা. সাফিয়া পারভীন।
অস্ত্রোপচারের পর থেকেই ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়েন কহিনুর বেগম। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল নিয়ে গেলে সেখানে এক্স-রে রিপোর্টে তার তলপেট কাঁচিসদৃশ একটি বস্তু ধরা পড়ে। এরপর গত ১৮ জুন বরিশালের শেরে-ই বাংলা মেডিকেলে অস্ত্রোপচার করে পেট থেকে অপসারণ করা হয় চিমটা। প্রাথমিক অস্ত্রোপচারে তার মলদ্বার বাদ দিয়ে আলাদা রাস্তা করা হলেও সেখানে ইনফেকশন হয়েছে। এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন কহিনুর বেগম।
আরও পড়ুনকহিনুর বেগমের মেয়েজামাই হুমায়ুন বলেন, আমার শাশুড়ি আমাদের বাড়ি বেড়াতে আসার পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে কুয়েত প্রবাসী হাসপাতালে ডাক্তার দেখাই। সেখানে তার অপারেশন করতে বলে। আমরা অপারেশন করাই এবং চারদিন হাসপাতালে থেকে বাড়ি নিয়ে আসি। এর একদিন পরেই তিনি আবার অসুস্থ হলে তাকে আবার সেই হাসপাতালে নিয়ে যাই। এরপরে সেখানে আবার ১১ দিন তারা ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়। তাও ভালো না হওয়ায় বরিশালে ডাক্তার দেখানোর পর তার পেটের মধ্যে চিমটা পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে কহিনুর বেগমের মেয়ে ফাহিমা বেগম বলেন, ভুল চিকিৎসার কারণে আমার মা এখন মৃত্যুশয্যায়। আমার মায়ের খাদ্যনালী কেটে ফেলতে হয়েছে। আমরা মামলা করবো। আমি ডাক্তার ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিচার চাই।
মন্তব্য করুন