বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় জোড়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা দায়ের

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জিয়ানগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীমন্ডপ পূর্বপাড়ায় হাত-পা বেঁধে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আলহাজ্ব আফতাব হোসেন (৭০) ও তার প্রবাসী ছেলের স্ত্রী রিভা আক্তার (৩৫) কে হত্যা ও দস্যূতার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে থানায় অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। নিহত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আলহাজ্ব আফতাব হোসেনের মেয়ে তহমিনা বিবি (৪০) বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জিয়ানগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীমন্ডপ পূর্বপাড়ার নিহত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আফতাব হোসেন এর বড় ছেলে শাহাজাহান আলী সৌদি আরবে প্রায় ৮ বছর যাবত কর্মরত। ছোট ছেলে শাহব উদ্দীন ওরফে শিহাব (২৭) ঢাকা সাভার নবীনগরে টেক্সটাইল কোম্পানিতে প্রোডাকশন অফিসার হিসাবে কর্মরত এবং স্বপরিবারে ঢাকায় বসবাস করে।
আফতাব হোসেন পুত্রবধু রিভা আক্তারসহ দ্ইু নাতি রফিকুল হাসান নিরব (১২) ও নাতনি রুকাইয়া তাসনিম মালিহা (৭) সহ গ্রামের বাড়িতে বসবাস করতেন। নাতি রফিকুল হাসান নিরব বগুড়া কানছগাড়িতে স্কুল অব দি-হলি কোরআন আবাসিক হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে। ঘটনার দিন গত মঙ্গলবার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে আফতাব হোসেন ও রিভা আক্তার নিজ নিজ শয়ন কক্ষে ঘুমাতে যান।
রাত আনুমানিক ১০টার পর থেকে পরের দিন ভোর ৪টার পূর্বে যে কোন সময় অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন দুষ্কৃতকারী আফতাব হোসেনের শয়ন কক্ষে সু-কৌশলে প্রবেশ করে। এবং তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে বসত ঘরের বারান্দায় ফেলে দেয় এবং হাত-পা, মুখ রশি দিয়ে বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তারা ওই কক্ষে প্রবেশ করে তার বাটন মোবাইল ফোন নেয় এবং ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করে। পরে দুষ্কৃতকারীরা তার ছেলের বউ রিভা আক্তারের শয়ন ঘরে প্রবেশ করে।
আরও পড়ুনএসময় রিভা ও তার শিশু কন্যা রুবাইয়া তাসনিম মালিহা টের পেয়ে চিৎকার করিলে দুষ্কৃতিকারীরা রিভা আক্তারকে হাত-পা, মুখ রশি ও কাপড় দিয়ে বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এবং শিশু কন্যাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘরে আটকে রাখে।
এরপর দুষ্কৃতকারীরা শিশু রুবাইয়া তাসনিম মালিহার গলায় থাকা সোনার চেন, স্টীলের শোকেজের ডয়ার ভেঙ্গে সোনার বিভিন্ন মালা, চেইন, এন্ড্রয়েড দুটি মোবাইল ফোনসহ মোট ১৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকার মালামাল লুট করে মেইন গেট দিয়ে চলে যায়। পরের দিন গত বুধবার ভোরে শিশু রুবাইয়া তাসনিম মালিহা মায়ের নিথর দেহ দেখে কান্না-কাটি শুরু করে। তার কান্না শুনে আত্মীয় স্বজনসহ প্রতিবেশিরা ছুটে আসে।
দুপচাঁচিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ফরিদুল ইসলাম জানান, ঘটনাটির তদন্ত চলছে। লোমহর্ষক জোড়া এই হত্যাকান্ডের পিছনে দস্যুতা মুল কারণ কি-না বা পূর্বের শত্রুতা, পারিবারিক বিরোধ কিংবা জমাজমি নিয়ে কোন ঝামেলাসহ অন্য কোন কারণ আছে কি-না তা চুলচেরা বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের শনাক্তের প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশের একাধিক টিমসহ অন্যান্য সংস্থাও মাঠে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে।
মন্তব্য করুন