ভিডিও শুক্রবার, ০১ আগস্ট ২০২৫

মেয়ের বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে হন নিখোঁজ, ২০ বছর পর ফিরলেন নিজ গ্রামে!

মেয়ের বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে হন নিখোঁজ, ২০ বছর পর ফিরলেন নিজ গ্রামে!

ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গাজীপুরে মেয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হন ৪৫ বছরের সালাউদ্দিন ফরাজি। এরপর কেটে গেছে ২০ বছর। স্বজনরা ধরেই নিয়েছিলেন আর ফিরবেন না। অবশেষে ২০ বছর পর খোঁজ মিলেছে ৬৫ বছরের সালাউদ্দিনের। গত ১৬ জুলাই নিজ গ্রামে পরিবারের কাছে ফিরেছেন পাঁচ সন্তানের এই জনক।

সালাউদ্দিন ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ থানা এলাকার নংলাপাতা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত জয়নাল ফরাজির ছেলে। ২০০৫ সালে নিখোঁজ হন তিনি।

পরিবারের সদস্যরা জানান, কাজের জন্য স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় পাড়ি জমান সালাউদ্দিন। তিনি রিকশা চালিয়ে পরিবারের ভরণপোষণ জোগাতেন। ২০০৫ সালে তার মেজো মেয়ের বাসা গাজীপুরে যাওয়ার উদ্দেশে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে বের হন। এরপর নিখোঁজ হন। সন্ধান চেয়ে পরিবারের লোকজন বহু চেষ্টা করেও খোঁজ পাননি। স্বজনরা ধরেই নিয়েছিলেন হয়তো জীবিত নেই। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দুই দশক পর নিজের বাড়ি ফিরলেন। বৃদ্ধ বয়সেও তাকে চিনতে ভুল করেননি পরিবারের লোকজন। তাকে ফিরে পেয়ে খুশি স্বজনরা।

সালাউদ্দিনের বড় মেয়ে রেখা বেগম জানান, তার বাবা যখন নিখোঁজ হন, তখন তিনি এক সন্তানের জননী ছিলেন। মেজো বোনকে বিয়ে দেওয়ার পর তারা গাজীপুরে বসবাস শুরু করেন। ২০০৫ সালে দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। বাবা মেজো বোনের বাসায় বেড়াতে বাসা থেকে বের হন। এরপর থেকেই বাবা নিখোঁজ ছিলেন। তারা ভেবেই নিয়েছেন হয়তো আর বেঁচে নেই।

রেখা বেগম বলেন, ‘গত ১৬ জুলাই চরফ্যাশন উপজেলার মায়া ব্রিজ এলাকায় কিছু লোক বাবাকে ঘোরাফেরা করতে দেখেন। স্থানীয়রা ভেবে নিয়েছেন তিনিই সালাউদ্দিন। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে বাবাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসি। আমার বাবা এখন কথা বলতে পারছেন না। অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন। এজন্য বলতে পারছেন না এতদিন কোথায় ছিলেন। তবে বাবাকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত আমরা। ফিরে পাওয়া বাবাকে নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তোলায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি। পুলিশ বাবা ও আমাদের ডিএনএ পরীক্ষা করবেন বলে জানিয়েছে।

আরও পড়ুন

সালাউদ্দিনের স্ত্রী মাসুমা জানিয়েছেন, স্বামী নিখোঁজ হওয়ার পর সন্তানদের নিয়ে বহু কষ্টে দিন পার করেছেন তিনি। খেয়ে না খেয়ে সন্তানদের আগলে রেখেছেন। স্বামী নিখোঁজ হওয়ার আগে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছোট এক মেয়ে ও দুই ছেলেকে বাসায় রেখে অন্যের বাড়িতে কাজ করেছেন তিনি।

মাসুমা বলেন, ‘দীর্ঘ ২০ বছর স্বামীর অপেক্ষায় ছিলাম। ভেবেছি বেঁচে থাকলে কোনও একসময় ফিরে আসবে। আবার কখনও মনে হয়েছিল সে হয়তো বেঁচে নেই। স্বামীকে নিয়ে বাকি জীবন পার করতে চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শশীভূষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিক হাসান রাসেল বলেন, ‘সালাউদ্দিনের মেয়ে রেখা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তবে নিখোঁজ সালাউদ্দিন তার বাবা কিনা তা শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। এরপর শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ব্যাচেলর সাংবাদিকদের বাস্তবতার এক হৃদয়ছোঁয়া প্রতিচ্ছবি— দেরি করে আসবেন

পর্দায় নয় বাস্তবে দুই অভিনেত্রীর তুমুল যুদ্ধ

জিমে পিস্তল দেখিয়ে ট্রেইনারকে হুমকি, গ্রেপ্তার গায়ক গিল মানু

বরিশালে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

বেইজিংয়ে ভয়াবহ বন্যা, এক বৃদ্ধাশ্রমেই মারা গেলেন ৩১ জন বয়স্ক মানুষ

ঢাবি থেকে বেনজীর আহমেদের ডক্টরেট ডিগ্রি স্থগিত