ঠাকুরগাঁওয়ে বিয়েতে নেই গাড়িবহর, আছে পালকি আর গরুর গাড়ি

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : বিয়ের দিন পালকিতে বসে আছেন নববধূ। মুখে লাজুক হাসি। বাইরে ঘোড়ার গাড়িতে অপেক্ষা করছেন বর। গরুর গাড়ির বহরে এসেছে বরযাত্রীরা। মনে হচ্ছে যেন কোনো গল্পের দৃশ্য। তবে এটা কোনো নাটকের সেট নয়, বাস্তব এক বিয়ের আয়োজন। ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার খাকড়তলা গ্রামের ব্যবসায়ী আনিসুজ্জামান শুভর বিয়েটা এখন গোটা এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
আনিসুজ্জামান শুভর বাবা শফিকুর রহমান চেয়েছিলেন, ছেলের বিয়ে হোক গ্রামবাংলার পুরোনো ঐতিহ্য পালকি, ঘোড়ার গাড়ি আর গরুর গাড়িতে। বাবা আর নেই। কিন্তু ছেলের মনে গেঁথে আছে তার সেই ইচ্ছা। বাবার স্বপ্ন পূরণেই এমন আয়োজন করলেন শুভ। বিয়ের দিন দুপুর গড়িয়ে বিকেল।
খাকড়তলা গ্রামের মেঠোপথ ধরে এগোচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি, পেছনে গরুর গাড়ির লম্বা বহর। বরযাত্রীদের কেউ পাঞ্জাবি পরে, কারও মাথায় গামছা জড়ানো। আশপাশের গ্রামের মানুষ দলে দলে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে দেখছে স্মার্টফোনে ছবি তুলছে, ভিডিও করছে।
আরও পড়ুনযাদুরানী গ্রামের শাহাবুদ্দিনের বাড়িতে কনে রিপা অপেক্ষা করছিলেন পালকির জন্য। শুভ এসে পৌঁছাতেই পালকি সাজিয়ে তোলা হলো। সেই পালকিতে বসে কনে রওনা দিলেন শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে। বর শুভ বললেন, বিয়ে মানেই তো আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া। সেটাই করেছি। কাউকে কিছু নিয়ে আসতে হয়নি। সবাই খুশি মনেই এসেছেন।
নববধূ রিপা বলেন, ছোটবেলায় গল্প শুনতাম পালকিতে করে কনে যেত। ভাবিনি, আমার জীবনে সত্যি হবে!
২ নম্বর আমগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হবিবর রহমান চৌধুরী বলেন, এখনকার যুগে এমন বিয়ে দেখাই যায় না। নতুন প্রজন্মের জন্য এটা শেখার মতো। এই বিয়ের মাধ্যমে যেন কেবল দু’জন মানুষের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হয়নি, শুরু হয়েছে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের প্রতি ভালোবাসা ফিরে পাওয়া।
মন্তব্য করুন